ইন্টারসেক্স, আন্তঃলিঙ্গ ট্রান্সজেন্ডার মানুষগুলোর জন্য আমাদের যা করনীয়ঃ
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু,
ইদানীং নারী দিবসে তাসনুভা আনান নামক যে ট্রান্সজেন্ডার নারীকে নিয়ে যে উদ্যোগ বৈশাখী টিভি চ্যানেলটিতে হল তা নিয়ে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষগুলোর আলোচনায় নতুন করে আবির্ভাব ঘটল। এটা অবশ্যই একটা সুন্দর উদ্যোগ ছিল যে তাদের নতুন করে সমাজে ভাল অবস্থানে নিয়ে আসা পবা তাদের মুল্যায়ন করা মানুষ হিসেবে, তার যোগ্যতা হিসেবে। এবং এ থেকে পরবর্তীতে আরো অনেকে সঠিক পথে শিক্ষাগত উন্নয়নের মাধ্যমে সমাজে নিজেদের ভাল অবস্থানে নিয়ে আসবে সেই আশাই রাখি।
এখন ওদের প্রতি কিন্তু আমাদের করনীয় অনেক কিছুই আছে, যার শুরু সেই পরিবার থেকে যেখানে তার জন্ম, এই সমস্যাগুলো অনেক সময় সঠিক গর্ভকালীন চেক আপ বা পরীক্ষার মাধ্যমেই নির্ণয় করা সম্ভব, সে জন্য আমাদের ডাক্তার সমাজকে একটু সতর্ক থাকতে হজবে যাতে সম্ভাব্য প্রয়োজনীয় চেক আপ গুলো যেন ভালভাবে সম্পন্ন হয়ে থাকে বেশ কিছু আল্ট্রাসাউন্ড ও জেনেটিক স্ক্রিনিং আছে যেগুলো দিয়ে রোগ নির্নয় সঠিক সময়ে সম্ভব বাচ্চাটি ত্রুটি যুক্ত কিনা আর অবশ্যই গর্ভবতী মাকেও সঠিক সময়ে ডাক্তারের শরাপন্ন হতে হবে। এ জন্য আমাদের অনেক বেশী পরিমানে গণ সচেতনতা মূলক প্রচারণা চালানো উচিত।
শিশু জন্মের পর পরি একজন শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এর শরণাপন্ন হয়ে বাচ্চাটাকে পরিপূর্ণ চেক আপ করতে হবে, এবং প্রয়োজনে প্রয়োজনীয় পরিক্ষা নিরিক্ষা করে নিতে হবে, অনেক সময় অনেক জেনেটিক রোগ সন্দেহ হলে আগেই পরীক্ষা এবং চিকিৎসার মাধ্যমে অনেক বড় ধরনের ক্ষতি থেকে বেচে যাওয়ার সম্ভাবনে থাকে বিশেষ করে ডাউন সিন্ড্রোম এর বাচ্চা গুলো আর প্রতিটি পরিবারের উচিত হবে যখন ধরনের শিশু গুলো কোন পরিবারের সদস্য হয়, তখন লোকের কথায় কান না নিয়ে বাচ্ছা গূলো কে আর দশটা বাচ্চার মত বা তারো চেয়ে বেশী যত্নে বড় করার চেষ্টা করা। এ বাচ্চাগুলো উপর ওয়ালার তরফ থেকে পরীক্ষা সরূপ, যারা ধৈর্য ধারণ করবে ও তাদের সাথে ন্যায় আচরন করবে তারা এর অনেক বড় পুরষ্কারো পাবে। তাই এদেরকে সমাজ থেকে পরিবার থেকে আলাদা না করে প্রতিটি সাধারণ শিশুর মত প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ও ধর্মীয় শিক্ষা ও চিকিৎসার মাধ্যমে যিথাযথ ভাবে মানুষ করলে এরাও দেশের জন্য অগ্রবর্তী ভূমিকে পালন করবে।
এখন যদি কোন বাচ্চার এ ধরনের লিংগ ঘটিত সমস্যা থাকে তা লোক্ লজ্জার ভয়ে লুকিয়ে না রেখে তাকে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের মাধ্যমে তআ অনেক ক্ষেত্রেই যাথাযথ সময়ে চিকিৎসা নিয়ে পরিপূর্ন সাধারণ মানুষে পরিবর্তন সম্ভব এবং এটা ধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকে জায়েজ। এটা শুধু তাদের জন্য যারা আসলেই এ ধরনের শারীরিক সমস্যায় ভুগেন যাদের ভেতরের এবং বাইরের অংগের মধ্যে অসামঞ্জস্যতা রয়েছে বা হরমোনজনীত সমস্যা আছে। কিন্তু যে সকল সম্পূর্ন সুস্থ পরিপূর্ন কিছু মানুষ যারা ছেলে হয়েও ছেলে বা মেয়ে হয়েও মেয়েদের প্রতি আকর্ষণ অনুভব করেন তাদের এটা মানসিক ব্যাধি হতে পারে কিন্তু এর জন্য লিংগ পরিবর্তনের কোন গ্রহণযোগ্যতা ধর্মীয় ও সামাজিক দৃষ্টিকোন থেকে নেই, অবশ্যই মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের শরনাপণ্ণ হতে পারেন। আর আমাদের সকলের দায়িত্ব আল্লাহ পাকের এই সৃষ্টীকে সম্মান জানিয়ে তাদেরকে অবজ্ঞা না করে সহযোগিতা ও আন্তরিকতার সাথে তাদের অবস্থান সহয করে দেয়া।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ এখানে তৃতীয় লিঙ্গ কথাটি কাউকে ছোট করার জন্য লেখা হয় নি, বরং এটা হিজড়া শব্দটীর পরিবর্তে ব্যবহৃত হয়েছে ।
আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে অনেক ভাল রাখুক ও ভাল কাজ করার তৌফিক ও হেদায়েত দিক, আমিন। ওয়াস সালামু আলাইকা ওয়ারাহ্ মাতুল্লাহ।