এলার্জী কেন হয় ?

এলার্জী নিয়ে নতুন কিছু তথ্য জেনে নিন। এলার্জী কেন হয়?

বর্তমানে এলার্জী বা সংবেদনশীলতা একটা প্রকট এবং বিশেষ সমস্যা হিসেবে দেখা যাচ্ছে। প্রায়ি পরিবারগুলোতে এক বা একাধিক লোক এই সমস্যায় ভুগে থাকেন। এলার্জী নিয়ে আমাদের জন সাধারনের অনেকের মাঝেই অনেক বিভ্রান্তি আছে, যে কোন চর্মরোগকেই অনেকে এলার্জী বলে থাকেন যা কিন্তু সঠিক নয়। আমাদের জীবন যাত্রার পরিবর্তন ও বায়ু দুষনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার সাথে সাথে এলার্জীও এখন অনেক বেড়ে গেছে, কিছু মানুষের জন্মগত হলেও এখন এটা পরিবেশ, জীবন যাত্রা এবং কর্মস্থল থেকে অর্জিত এখন অনেকাংশেই।

সাধারণত কিছু বেশ কিছু খাবার, ধুলা বালি, পশম, পরাগ রেনু, সুর্যের আলো, কেমিক্যাল, গরম ঠান্ডা আবহাওয়া এমনকি পানি এবং আরো অনেক কিছুই এই এলার্জীর উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে থাকে। খাবারের মধ্যে দুধ, ডিম, গরুর মাংস, ইলিশ, চিংড়ি সামুদ্রিক মাছ, বাদাম,চেস্টনাট,ডাল, পুইশাক, সজনে, এমনকি খাবারে ব্যবহার করা প্রাকৃতিক প্রক্রিয়াজাতকরন উপাদান সাইট্রিক এসিড, ইস্ট এসব জিনিসেও এলার্জি হতে পারে। এছাড়া বাসায় পোষা প্রানীর লোম, পশম যুক্ত পরিধেয় কাপড়, বিভিন্ন রকমের, বিভিন্ন পোকা মাকড়, কীট, লার্ভা, সিগারেটের ধোয়া, যানবাহন, কলকারখানা এমনকি রান্নার যে ধোয়া সেখান থেকেও এলার্জি হতে পারে।

আরও অবাক করা তথ্য হচ্ছে, অনেক সময় নিজের শরীরের প্রজেস্টেরন হরমোন ও এলার্জি উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে। এর মেডিক্যাল নাম Autoimmune Progesterone dermatitis. এবং নিজের লাইফপার্টনারের সিমেন এর কারন হয়ে ওঠে অনেকের ক্ষেত্রে। আরো বিচিত্র এলার্জী হচ্ছে ডার্মাটোগ্রাফিসম যা কিনা শুধু গরম পানি দিয়ে গোসলের পর টাওয়াল শরীরে জড়িনো থেকেই দেখা যাতে পারে। এমনকি exercise একা বা এলার্জী জাতীয় খাবার খাওয়ার পর শারীরিক কসরত করার ২ ঘণ্টায় মধ্যে এসব এলার্জির লক্ষন প্রকাশ পেতে পারে, যাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় physical urticaria বলা হয়। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক হতে পারে ড্রাগ বা পেনিসিলিন এলার্জী বা খাবার যা কিনা মৃত্যুর ঝুঁকি বহনে সক্ষম।

পানির সংস্পর্শ থেকেও এলার্জী হতে পারে যার নাম একুয়াজেনিক এলার্জী, সাধারণত যে কোন পানিতে গোসলের পর পরি এ এলার্জী দেখা দেয়।

শরীরের অভ্যন্তরের কোন হরমোনাল রোগ বা ক্যান্সার ও হতে পারে এর অন্যতম কারন যদিও এর হার শতকরা ৫ ভাগেরো কম।

এবং এখন খাবারের চেয়েও যে এলার্জী অনেক বেশি হছে তা হচ্ছে ড্রাগ এলার্জী, যা কিনা মৃত্যু ঝুকি বহনেও সক্ষম।

সে জন্য আমাদের উচিত, সঠিক সময়ে ঠিক ভাবে এলার্জেন বা উদ্দীপক টাকে চিহ্নিত করা ও সেগুলো থেকে দূরে থাকা। ধুলা বালি ও ধোয়া থেকে বেচে থাকা। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা। এবং প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া।

এলার্জী প্রতিরোধে আমাদের নগরায়ন -শিল্পায়নে কেমিক্যাল এর ব্যবহার কমিয়ে প্রকৃতির দিকে ফিরে যাওয়া ও দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষা ও বনায়নে নতুন পদক্ষেপ গ্রহন ও সচেতনতাই আমাদের এর হার অনেক কমিয়ে আনতে গুরড়ুত্ত্বপূর্ন ভুমিকা পালনে সক্ষম।

গণসচেতনতায় চিকিৎসক সমাজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *